দ্বিতীয় পুরুষ (সিনেমা ২০২০)


প্রযোজনা: এস ভি এফ প্রাইভেট লিমিটেড

পরিচালনা: সৃজিত মুখোপাধ্যায়

সঙ্গীত পরিচালনা: অনুপম রায়

ক্যামেরাম্যান: সৌমিক হালদার

অভিনয়: পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, রাইমা সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, গৌরব চক্রবর্তী, ঋদ্ধিমা, ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়, বাবুল সুপ্রিয় এবং প্রমুখ

ভাষা: বাংলা

  

সৌভিক বিশ্বাস



 রিভিউ: বাইশে শ্রাবণ যারা   দেখেছিল তারা  একটি  নতুন ধরনের বাংলা সিনেমা পেয়েছিলো এবং তারসাথে বাই-প্রডাক্ট হিসাবে বাঙালি প্রেমবাঙালি   নস্টালজিয়া এইসব পাওয়া গেছিলো এই কারণগুলো মানুষকে এবারও হলমুখী করেছে কতটা জমলো এই সিনেমার গল্প? প্রথমেই বলি দ্বিতীয় পুরুষ কিন্তু তারাও দেখতে পারবে যারা এখনও বাইশে শ্রাবণ দেখেনি কারণ সিনেমায় পুরোনো চরিত্রগুলো বাদ দিয়ে গল্পটা আদ্যোপান্ত নতুন সিনেমাটা তে দেখা যায় কলকাতার চাইনা টাউনে কিছু পরপর খুন হয় যেটা ঘটনাক্রমে অভিজিৎ পাকরাশির (পরমব্রত) হাতে আসে এবং তার সহকারী রজতের (গৌরব) সাহায্য নিয়ে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করে জানতে পারে এই সব খুনের সাথে জড়িত একজন সে হলো খোকা (অনির্বাণ); যে কিনা একজন সিরিয়াল কিলার, ২৫ বছর পর জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে খুনের কিনারা করতে গিয়ে ১৯৯৩ এর ব্যাকড্রপ চলে আসে এইভাবে গল্প তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে চলে এবং হাঁড় হিম করা একটি ক্লাইম্যাক্স দিয়ে সিনেমার যবনিকা পতন হয় এছাড়া এই সিনেমার সাব প্লট হিসেবে তুলে ধরা হয় অভিজিৎ আর অমৃতার বৈবাহিক জীবনের রসায়ন, টানাপোড়েন রজত এবং তার প্রেমিকা (ঋদ্ধিমা) এর মিষ্টি প্রেম এখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে অভিনয়ের কথায় আসলে প্রথমেই আসে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের কথা; অভিজিতের বয়সের সাথে সাথে যে অভিজ্ঞতা, পরিপক্বতা এসেছে সেটা সে খুবই অনবদ্য ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে রাইমা সেন যথাযথ গৌরব তার চরিত্রে ঠিকঠাক ঋতব্রত খোকার ছোটবেলার চরিত্রে একেবারে ফাটিয়ে অভিনয় করেছে ঋদ্ধিমার চরিত্রে সেরকম কিছু করার ছিল না বাবুল সুপ্রিয় এর মুখে কিছু মুচমুচে সংলাপ শুনতে বেশ লেগেছে জিমির চরিত্রে যে অভিনয় করেছে সে বেশ নজর কেড়েছে এবার যার কথায় আসতেই হবে যে হলো এই সিনেমার লাকি চার্ম অনির্বাণ ভট্টাচার্য তার চাল-চলন, কথাবলার ভঙ্গিমা, অভিব্যাক্তি, উপস্থাপনা সিনেমাটিকে অন্য মাত্রা দিয়েছে সৃজিত আরেকবার বুঝিয়ে দিলেন অনির্বাণ তার লাল গুটি; যেটাকে স্ট্রাইকার দিয়ে ঠিকভাবে হিট করাতে হবে মিউজিকের ব্যাপারে বলতে গেলে পুরোনো গানের রিপ্রাইজ ভার্সন বাদে ব্যবহৃত নতুন গানগুলো মনে খুব একটা দাগ কাটেনি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ভালো ক্যামেরার কাজ বিশেষভাবে উল্লেখ্য কারণ বাংলা সিনেমায় দৌড়ানোর দৃশ্যে খুব লং শট মনে হয় না আগে দেখা গেছে বলে সম্পাদনা ঠিকঠাক বাংলা ভাষার প্রতি দায়িত্বশীল অভিজিতকে এবারও পর্দায় দেখা গেছে সিরিয়াল কিলিং এর ওপর লেখা সাহিত্যের উল্লেখ এখানে পাওয়া গেছে সিনেমার সংলাপ সৃজিতের প্রতিটি সিনেমার মতই সেরা সিনেমার কালার এডিটিং বেশ ভালো যেটা ওই চাইনা টাউনের খুনের পরিবেশকে ফুটিয়ে তোলে আবীর এবার এই সিনেমায় আবার বিরিয়ানির মত আসে এবং তার গন্ধ ছেড়ে যায় তাই দর্শক ডাল ভাত কে পেয়েও বিরিয়ানি আরো খেতে চায় প্রসেনজিৎ এই সিনেমায় না থাকলেও তার ভয়েস ওভার নস্টালজিয়ার সাথে এটা মনে করায় যে তিনি সত্যিই না থেকেও যেনো থেকে গেছেন প্রচুর বাংলা খিস্তি সেটার ব্যবহার এখানে একটা টাইমের পর একটু একঘেয়ে লাগলেও লাগতে পারে সিনেমার সব জায়গায় লজিক লাগাতে গেলে মুশকিল কারণ cinematic liberty এর সাহায্য নেওয়া হয়েছে বাইশে শ্রাবণের সাথে এই পার্ট তুলনা করা হলে এই পার্টের কিছু অংশ সত্যিই আগের থেকে ভালো আবার কিছু অংশ আগের পার্টের থেকে বেশ খারাপও তবে এই সিনেমা একবার অন্তত দেখার দাবি রাখে এটা বলাই বাহুল্য


Comments

  1. একবার না দুবারও দেখা যায়, তবে খুব বেশি বার দেখা যায়না, আর আমার একটা যেটা মনে হয়েছে যে, জোর করে বাইশে শ্রাবনের সঙ্গে কানেকশন টেনেছে, যেটা না করলেও হতো

    ReplyDelete

Post a Comment